Wellcome to National Portal
মেনু নির্বাচন করুন
Main Comtent Skiped

কৃষি তথ্য ও সার্ভিস
আমন ধানে পোকামাকড় ও রোগবালাই দমনে করণীয়
প্রকাশিত

মাজরা পোকা:
লক্ষণ: মাজরা পোকার সদ্য ফোটা কীড়াগুলো ধান গাছের কান্ডে প্রবেশ করে ও মাঝখানের ডিগ কেটে দেয়। ফলে শীষ বের হওয়ার আগেই মরা ডিগের সৃষ্টি হয় যাকে ডেড হার্ট বলে। গাছে থোড় আসার পর ডিগ কেটে দিলে শীষ শুকিয়ে মারা যায় বলে একে মরা শীষ বা হোয়াইট হেড বলে। মরা ডিগ টান দিলে সহজেই উঠে আসে।
দমন ব্যবস্থাপনা:
    #     পূর্ন বয়স্ক মাজরা পোকার প্রার্দুভাব বেড়ে গেলে ক্ষেত থেকে ২০০-৩০০ মিটার দুরে আলোর ফাঁদে মথ আকৃষ্ট করে মেরে ফেলা।
    #   মাজরা পোকা পাতার উল্টো পিঠে ডিম পাড়ে।
    #    ডিমের গাদা সংগ্রহ করে ধ্বংস করা।
    #    রোপা ধান কাটার পর নাড়াগুলো পুড়িয়ে ফেলা।
    #    মেহগনির বীজ পানিতে মিশিয়ে রেখে যে কষ হয় তা ৬/৭ গুন পানিতে মিশিয়ে স্প্রে করা।
    #    প্রতি বর্গ মিটারে ২ থেকে ৩ টি স্ত্রীমথ বা ডিমের গাদা অথবা রোপনের ৪০ দিন পর থেকে থোড় আসা পর্যন্ত ১০ থেকে ১৫% মরা ডিগ অথবা ৫% মরা শীষ দেখা দিলে অনুমোদিত বালাইনাশক সঠিক মাত্রায় প্রয়োগ করা।

পাতা মোড়ানো পোকা:
লক্ষণ: এ পোকার কীড়া পাতা লম্বালম্বি মুড়িয়ে ভিতরের সবুজ অংশ খায় এবং আক্রান্ত স্থানে লম্বালম্বি সাদা দাগ দেখা যায়। খুব বেশী ক্ষতি হলে পাতা পুড়ে যাওয়ার মতো দেখায়।
দমন ব্যবস্থাপনা:
#     পাচিং করা বা ডাল পুঁতে দেওয়া
#     আলোর ফাঁদ ব্যবহার করা
#     হাত জাল দ্বারা মথ সংগ্রহ করে ধ্বংস করা।
#     পরজীবি বা উপকারী পোকার সংরক্ষণ ও সংখ্যা বৃদ্ধিও জন্য কীটনাশক প্রয়োগ যথাসম্ভব পরিহার      করা।
#     শতকরা ২৫ ভাগ পাতা ক্ষতিগ্রস্থ হলে অনুমোদিত কীটনাশক প্রয়োগ করা।



বাদামী গাছ ফড়িং (বিপিএইচ):
লক্ষণ: এটি ধান গাছের মারাত্মক ক্ষতিকর পোকা। কখনও কখনও একটি ধান গাছের গোড়ায় ৩০০-৪০০ নিষ্ফ এর উপস্থিতি দেখা যায়। বাচ্চা ও পূর্নবয়স্ক উভয় অবস্থায় এ পোকা ধান গাছের গোড়ায় বসে রস শুষে খায়। ফলে গাছ নিস্তেজ হয়ে যায় এবং ফড়িং পোড়া বা বাজপোড়া (হপার বার্ন) অবস্থার সৃষ্টি করে। ধানের চারা অবস্থা থেকে শুরু করে ধান পাকার পূর্ব পর্যন্ত প্রতিটি পর্যায়ে এ পোকার আক্রমণ হতে পারে। তবে ধানের শীষ আসার সময় বা তার আগে হপারবার্ন হলে কোন ফসলই পাওয়া যায় না। অবশ্য ধানের দানা শক্ত হওয়ার পর হপারবার্ন হলে ক্ষতি কম হয়।
দমন ব্যবস্থাপনা:
#     আক্রান্ত জমির পানি ৭-৮ দিনের জন্য সরিয়ে দেওয়া।
#     আক্রমন প্রবন এলাকায় ২৫ সেঃমিঃ বা ১০ ইঞ্চি দুরে দুরে চারা রোপন।
#     সুষম মাত্রায় সার প্রয়োগ করা।
#     আক্রান্ত জমিতে ইউরিয়া সার প্রয়োগ না করা।
#     ধান গাছ আগাছা মুক্ত রাখা।
#    বাদামী গাছ ফড়িংয়ের উপস্থিতি পরিলক্ষিত হলে ২ হাত পর পর বিলি করে আলো বাতাস প্রবেশের ব্যবস্থা করা।
#    জমিতে আলোর ফাঁদ ব্যবহার করা।
#    জমিতে পার্চিং করা ও উপকারী পোকা মাকড় সংরক্ষণ করা।
#    আক্রান্ত জমির ধান কাটার পর ধানের নাড়া পুড়িয়ে ফেলা।
#    শতকরা ৮০ ভাগ ধান পেকে গেলে দ্রুত মাঠের ধান কেটে ফেলা।
#    অনুমোদিত কীটনাশক বিলিকেটে গোড়ার দিকে স্প্রে করা, বৃষ্টিতে ধুয়ে গেলে এক সপ্তাহ পরে পুনরায় স্প্রে করা।

চুঙ্গী পোকা:
লক্ষণ: ক্রীড়াগুলো রাতের বেলায় পাতার সবুজ ক্লোরোফিল অংশ লম্বালম্বি এমনভাবে কুড়েকুড়ে খায় যে শুধুমাত্র উপরের পর্দাটি বাকী থাকে। এরা পাতার উপরের অংশ কেটে আড়াই থেকে তিন সেন্টিমিটার লম্বা চুঙ্গী তৈরী করে এবং দিনের বেলায় এ সমস্ত চুঙ্গীর মধ্যে লুকিয়ে থাকে। পাতা কুড়ে কুড়ে খাওয়ার জন্য এবং পাতা কেটে চুঙ্গী বানাবার ফলে আক্রান্ত গাছের পাতায় লম্বা সাদা দাগ ও পাতার আগা কাটা দেখতে পাওয়া যায়। চুঙ্গীগুলো আক্রান্ত গাছের গায়ে ঝুলতে থাকে এবং ক্ষেতের পানিতে ভাসতে থাকে।
দমন ব্যবস্থাপনা:
#     জমির পানি শুকিয়ে ফেলা কারণ চুঙ্গী পোকার ক্রীড়া পানি ছাড়া বাঁচতে পারেনা।
#     আলোর ফাঁদেও সাহায্যে পূর্ণ বয়স্ক মথ ধরে মেরে ফেলা।
#      করোসিন মিশ্রিত রশি টান দিয়ে চুঙ্গী মাটিতে ফেলে দেওয়া।
#     ক্ষেতে ডালপালা পুঁতে দেওয়া।
#     শামুক, মাকড়সা ও বোলতা সংরক্ষণ করা।
#    শতকরা ২৫ ভাগ পাতার ক্ষতি হলে অনুমোদিত কীটনাশক সঠিক মাত্রায় ব্যবহার করা।

লেদা পোকা:
লক্ষণ: প্রাথমিক অবস্থায় ক্রীড়াগুলি ধানের পাশ থেকে পাতা কেটে দেয়। ক্রীড়াগুলি ধানের পাশ থেকে পাতা কেটে দেয়। ক্রীড়াগুলি আধা পাকা বা পাকা ধানের শীষের গোড়া থেকে কেটে দেয়।
দমন ব্যবস্থাপনা:
#     ধান কাটার পর মাটির ফাটলে ও শস্য অবশিষ্ঠাংশে অবস্থানরত ক্রীড়া ও পুত্তলী ধ্বংস করতে নাড়া পুড়িয়ে দিলে পরবর্তী ফসলে আক্রমন কমে যায়।
#     আক্রান্ত ক্ষেতে সেচ দেওয়া।
#      ক্ষেতে ডালপালা পুঁতে দেওয়া।
#     ক্ষেতের  চারপাশে নালা করে সেখানে কেরোসিন মিশ্রিত পানি দিয়ে রাখলে ক্রীড়া অন্য জমিতে যেতে পারেনা।
#    ধানের ক্ষেতে প্রতি বর্গমিটারে ২-৫টি ক্রীড়া পাওয়া গেলে অনুমোদিত কীটনাশক সঠিক মাত্রায় ব্যবহার করা।
গান্ধি পোকা ঃ
লক্ষণ ঃ গান্ধি পোকার পূর্নবয়স্ক ও বাচ্চা ধানের দানায় দুধ অবস্থায় আক্রমণ করে ফলে দান চিটা বা ধানের মান খারাপ হয়ে যায়। বাচ্চা ও পূর্নবয়স্ক গান্ধি পোকার গা থেকে বিশ্রী গন্ধ বের হয়। এ পোকার জীবন ক্রমের তিনটি স্তরের মধ্যে বাচ্চা (নিমফ্) ও পূর্নবয়স্ক উভয় অবস্থাতেই ধানের ক্ষতি করে। আক্রমণ তীব্র হলে ফলন কমে যায়।
দমন ব্যবস্থাপনা ঃ
#    আলোক ফাঁদের সাহায্যে পোকা দমনের ব্যবস্থা নেয়া।
#     ডিমের গাদা সংগ্রহ করে নষ্ট করা।
#    শামুকের মাংসে বিষ মেখে পুটলি করে ক্ষেতের মাঝে মাঝে ঝুলিয়ে রাখা।
#    প্রতি গোছায় ২-৩ টি গান্ধি পোকা দেখা দিলে অনুমোদিত কীটনাশক সঠিক মাত্রায় প্রয়োগ করতে হবে। যদি ধান গাছ ফুল অবস্থায় থাকে সে ক্ষেত্রে বিকাল বেলায় কীটনাশক প্রয়োগ করা বাঞ্ছনীয়।

পামরী পোকা:
লক্ষণ ঃ ক্ষতিগ্রস্থ পাতায় শিরার সমান্তরালে লম্বালম্বি দাগ পড়ে। পূর্ণ বয়স্ক ও গ্রাব দুই অবস্থায় ধানের ক্ষতি করে। ক্রীড়াগুলি পাতার দুই পর্দার মাঝে সুড়ঙ্গ করে সবুজ অংশ খাওয়ার ফলে পাতা শুকিয়ে যায়। বাড়ন্ত ধানের জমিতে আক্রমন বেশী হয়।
দমন ব্যবস্থাপনা ঃ
#    আইল বা পার্শ্ববর্তী জায়গায় আগাছা নষ্ট করা।
#    হাত জালের সাহায্যে বয়স্ক পোকা ধওে মাটিতে পুঁতে ফেলা।
#    শতকরা ৩৫ ভাগ পাতার ক্ষতি হলে অনুমোদিত কীটনাশক সঠিক মাত্রায় ব্যবহার করা।

পাতাপোড়া রোগ/বিএলবি রোগ:
লক্ষণ: পাতা পোড়া রোগ চারা এবং বয়স্ক গাছে তিন ধরনের লক্ষণ সৃষ্টি করে। লক্ষণগুলি নিম্নরূপ:-
ক) কৃসেক-চারা ও কুশি অবস্থায় সাধারনত: কৃসেক লক্ষণ প্রকাশ পায়। এ রোগের কারনে গাছটি প্রথমে নেতিয়ে পড়ে ও আস্তে আস্তে সম্পূর্ণ গাছটি মারা যায়। আক্রান্ত গাছের কান্ড ছিড়ে চাপ দিলে বা চারাটি গোড়ার দিকে ভেঙ্গে দু’আঙ্গুল দিয়ে চাপ দিলে পুঁজের মত খুব দুর্গন্ধযুক্ত পদার্থ বের হয়।
খ) ফ্যাকাশে হলুদ পাতা-আক্রান্ত গাছের কচি পাতা ফ্যাকাশে হলুদ হয়ে অবশেষে শুকিয়ে মারা যায়। সাধারণত: দিবা রাত্রির তাপমাত্রার পার্থক্য ৮-১০ ডিগ্রি সেঃ এর বেশী হলে এ লক্ষণ দেখা যায়।
গ) পাতাপোড়া- ধান গাছের কুশি বা তার পরবর্তী পর্যায়ের যে কোন সময়ে পাতাপোড়া লক্ষণ দেখা যায়। প্রাথমিক লক্ষণ হিসাবে পাতার যে কোন স্থানে বা বিশেষ করে অগ্রভাগে বা কিনারায় নীলাভ পানিচোষা দাগ দেখা যায়। দাগগুলো আস্তে আস্তে হালকা হলুদ রং ধারন করে। এ রোগের কারনে শীষ বের হতে পারে না বা বের হলেও  চিটা বা আংশিক অপুষ্ট হয় এবং ফলনের অনেক ক্ষতি হয়।
দমন ব্যবস্থাপনা:
#    বীজতলা থেকে চারা উঠানোর সময় খেয়াল রাখতে হবে শিকড় যাতে ক্ষতিগ্রস্থ না হয়।
#     রোগ প্রতিরোধী জাতের ব্যবহার পাড়াপোড়া রোগকে অনেকগুনে কমিয়ে রাখে। সে লক্ষ্যে আমন মৌসুমে ব্রি ধান-৪০, ব্রি ধান-৪১ এর চাষ করা।
#    সুষম মাত্রায় সার ব্যবহার ও ইউরিয়া সার তিন কিস্তিতে প্রয়োগ করা।
#    ধান কাটার পর জমিতে নাড়া ও খড় পুড়িয়ে ফেলা যাতে করে পরবর্তী ফসলে আর এ রোগ দেখা দিতে না পারে।
#    ঝড় ও অত্যাধিক বৃষ্টির পর ইউরিয়া সার না দেয়া, রোগ দেখার পর ইউরিয়া সার উপরি প্রয়োগ বন্ধ করা।
#    পাতাপোড়া বা কৃসেক লক্ষণ দেখা দিলে জমির পানি শুকিয়ে ৭-১০ দিন পর আবার পানি দেয়া।
#    বিঘা প্রতি ৫ কেজি পটাশ সার ছিপছিপে পানিতে প্রয়োগ করে মাটিতে ভালভাবে মিশিয়ে দিলে এ রোগের তীব্রতা কমে।


খোলপঁচা রোগ:
রোগের লক্ষণ: প্রথমে ডিগ পাতার খোলে ছোট ছোট বাদামী আকারের দাগ পড়ে। দাগলো আস্তে আস্তে বেড়ে একত্রে মিশে সম্পূর্ণ খোলে ছড়িয়ে পড়ে।  রোগের আক্রমণ বেশী হলে আক্রান্ত কুশির শীষ বের হতে পারে না। অনেক সময় শীষ অর্ধেক বের হয় এবং ধান কালো ও চিটা হয়ে যায়।
দমন ব্যবস্থাপনা:
#    জমিতে পরিমিত ইউরিয়া সার ব্যবহার করা।
#     জমির পানি শুকিয়ে আবার পানি দেওয়া।
#    প্রয়োজনে আক্রমনকালে প্রোপিকোনাজল একর প্রতি ৪০০ মিলি ব্যবহার করা।
কান্ড পঁচা রোগ:
লক্ষণ: পানির উপরিতল বরাবর কুশির বাইরের খোলে কালচে গাঢ় অনিয়মিত দাগ পড়ে। ক্রমান্বয়ে দাগগুলো বড় হয়ে পরস্পর মিশে সমস্ত খোলে ছড়িয়ে পড়ে। ছত্রাক কান্ডের ভেতরে  প্রবেশ করে কান্ডকে পঁচিয়ে ফেলে। আক্রান্ত কুশি থেকে শীষ বের হলে চিটা ও অপুষ্ট হয়।
দমন ব্যবস্থাপনা:
#    সুষম মাত্রায় সার প্রয়োগ করা।
#    ঘন করে চারা না লাগানো।
#    আক্রান্ত জমির পানি শুকিয়ে আবার পানি দেওয়া।
#    বেশি মাত্রায় রোগ দেখা দিলে কপার অক্সিক্লোরাইড ০.৪% বা ০.২% ব্যবহার করা।

বাদামী দাগ রোগ:
লক্ষণ: পাতায় প্রথমে তিলের দানার মতো ছোট ছোট বাদামী দাগ হয়। ক্রমান্বয়ে বেড়ে ওঠা গোলাকৃতি দাগের মাঝখানটা অনেক সময় সাদাটে ও কিনারা বাদামী রঙের হয়। একাধিক দাগ মিলে বড় দাগের সৃষ্টি হয়ে সমস্ত পাতাটিই দাগে পরিপূর্ণ হয়ে যেতে পারে এবং গাছটিকে মেরে ফেলতে পারে।
দমন ব্যবস্থাপনা:
#    বীজতলা বা জমি সবসময় ভেজা বা স্যাঁতস্যাঁতে রাখা।
#    জমিতে পর্যাপ্ত পরিমানে নাইট্রোজেন ও পটাশ সার ব্যবহার করা।
#    পরিমানমতো  ইউরিয়া উপরি প্রয়োগ করলে এ রোগ আর বাড়তে পারেনা।
#    রোগ বেশি মাত্রায় দেখা দিলে কার্বান্ডিজম প্রতি ১০ লিটার পানিতে ২০ মিলি হারে ¯েপ্র করা।

টুংরো:
লক্ষণ: আক্রান্ত পাতা প্রথমে হালকা হলুদ এবং পরে গাঢ় হলুদ থেকে কমলা বর্ণেও হয়। কচি পাতাগুলো পুরাতন পাতার খোলের মধ্যে আটকে থাকে। পাতা ও কান্ডের মধ্যবর্তী কোণ বেড়ে যায় ও গাছ খাটো হয়। আক্রান্ত ধান গাছ পাকা পর্যন্ত বেচে থাকলে ও আক্রমন তীব্র হলে গাছ টান দিলে উঠে আসে এবং শুকিয়ে খড়ের মত হয়ে যায়। বিক্ষিপ্ত কিছু কিছু গাছে প্রথমে হলুদ হয়ে আক্রান্ত গুছির সংখ্যা বাড়তে থাকে।
দমন ব্যবস্থাপনা:
#    আলোর ফাঁদ ব্যবহার করে পাতা ফড়িং মেরে ফেলা (সবুজ পাতা ফড়িং এ ভাইরাসের বাহক)।
#    টুংরো আক্রান্ত জমির আশেপাশে বীজতলা করা থেকে বিরত রাখা।
#    হাতজালের প্রতি একশো টানে ৪০-৫০ টি সবুজ পাতা ফড়িং পাওয়া গেলে অনুমোদিত ছত্রাক নাশক অনুমোদিত মাত্রায় ব্যবহার করা।

বাকানী ও গোড়া পঁচা:
লক্ষণ: এ রোগের স্পষ্ট লক্ষণ হলো আক্রান্ত ধানের চারা স্বাভাবিক চারার চেয়ে প্রায় দ্বিগুণ লম্বা হয়ে ফ্যাকাসে রং ধারণ করে। আক্রান্ত চারার পাতা হলদে সবুজ হয়। আক্রান্ত চারাগুলো বেশিদিন বাঁচেনা। আক্রান্ত কুশি লিকলিকে হয়। এদের ফ্যাকাসে সবুজ পাতা অন্যান্য গাছের উপর দিয়ে দেখা যায়। নিচের দিকে গিটে অস্থানিক শিকড় ও দেখা যেতে পারে। দ্বিতীয় পর্যায়ের লক্ষণ হলো গোড়া পঁচা।
দমন ব্যবস্থাপনা:
#    মাঠে বাকানী দেখা দিলে জমি থেকে তুলে সে স্থানে অন্য সুস্থ গাছ লাগানো।
#    গোড়া পঁচা দেখার সাথে সাথে জমি শুকিয়ে ফেলা।
#   বীজতলা হিসেবে একই জমি ব্যবহার না করা।
#    বীজতলায় পানি ধরে রাখা।

ব্লাষ্ট রোগ:
লক্ষণ: পাতা, কান্ড ও শীষ আক্রান্ত হয়। প্রথমে পাতায় ডিম্বাকৃতির দাগ পড়ে যার দু প্রান্ত লম্বা হয়ে চোখাকৃতি ধারণ করে। দাগের মধ্যভাগ ছাই রংয়ের ও বাইরের দিকের প্রান্ত গাঢ় বাদামী হয়। অনেকগুলি দাগ একত্রে মিলে পাতাটি মরে যেতে পারে।
দমন ব্যবস্থাপনা:
#    সুষম মাত্রায় সার প্রয়োগ করা।
#    জমিতে সব সময় পানি রাখা।
#    কুশি অবস্থায় রোগটি দেখা দিলে বিঘা প্রতি ৫ কেজি পটাশ সার উপরি প্রয়োগ করে সেচ দেওয়া।
#    রোগাক্রান্ত বেশি হলে ট্রাইসাইক্লাজল প্রতি লিটার পানিতে ১.৬২ গ্রাম মিশিয়ে স্প্রে করা।
খোলপোড়া রোগ:
লক্ষণ: এ রোগে প্রাথমিক অবস্থায় পানির উপরিভাগে খোলের উপর পানি ভেজা হালকা সবুজ রংয়ের দাগ তৈরি হয়। যা পরবর্তীতে কেন্দ্রে ধুসর ও প্রান্তে বাদামী রঙ ধারন করে। এ দাগগুলো একত্রিত হয়ে পাতার খোল ও পাতায় ছড়িয়ে পড়ে যা দেখতে গোখড়া সাপের চামড়ার মত মনে হয়।
দমন ব্যবস্থাপনা:
#   রোগ সহনশীল জাতের ব্যবহার যেমন: ব্রি ধান-৪০, ব্রি ধান-৪১ এর চাষ করা।
#    সুষম মাত্রায় সার ব্যবহার করা এবং অতিরিক্ত ইউরিয়া প্রয়োগ পরিহার করা।
#    সঠিক রোপন দুরত্বে চারা রোপন।
#    পটাশ সার ৩ (তিন) কিস্তিতে প্রয়োগ করা।
#     রোগ দেখা দিলে জমিতে পর্যায়ক্রমে পানি দেয়া ও শুকানো।
#    প্রয়োজনে অনুমোদিত ছত্রাক নাশক সঠিক মাত্রায় প্রয়োগ করা।